সাক্ষাৎকারে গোলাম মোর্তোজা

841 Visited

22 Sep
সাক্ষাৎকারে গোলাম মোর্তোজা

বাংলাদেশের সংবাদ শিল্পের প্রবাদ প্রতিম পুরুষ গোলাম মোর্তোজা। “সাপ্তাহিক বিচিত্রা” সাপ্তাহিক ২০০০ ঘুরে এখন তিনি “সাপ্তাহিক ” এর সম্পাদক, চ্যানেল আই টেলিভিশনের “সংবাদ পত্রে বাংলাদেশ” অনুষ্ঠানটি মোর্তোজা নিয়মিত পরিচালনা করেন, দীর্ঘ দিন ধরে।সম্পতি গোলাম মোর্তোজা দেশ সংস্কৃতিক গোষ্ঠির আমন্ত্রনে বৈশাখী আড্ডায় যোগ দেন জার্মানির ফ্রা´ফুট শহরে। ভ্রমন করেন ইতালী এবং অষ্ট্রিয়া। প্রাকৃতিক সৌন্দতের লীলাভূমি ইতালির বোলছানো শহরে গোলাম মোর্তোজার মুখোমুখি হলে তিনি তার দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনের অভিজ্ঞতার বিদগ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে খোলামেলা বিশ্লেষন করেন বতমান রাজনীতির ঘটনা প্রবাহ। সাক্ষাৎকারটি নিয়ে লিখেছেন শেখ মহিতুর রহমান বাবলু

কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে সরকার দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেংগে চুরমার করে ফেলেছে। এ সরকারের পক্ষে অর্থনীতির হাত মজবুত করা আর সম্ভব নয়....গোলাম মোর্তোজা  

 

বাবলুঃ আপনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরেছেন। প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের কোন দিকটি আপনার ভাল বা খারপ লেগেছে?

মোর্তোজা ঃ খারাপ লাগার মতো তেমন কিছু আমার চোখে পড়েনি। তবে প্রবাসীদের ইতিবাচক দিক অনেক। প্রবাসের কঠিন বাস্তবতাকে উপেক্ষ করে প্রবাসীরা যে যার অবস্থান থেকে বাংলাদেশের কখা ভাবে। দেশের উন্নতি অগ্রগতি ও দেশের ভাবমুর্তি কিভাবে দেশের বাইরে প্রতিষ্ঠা করা যায় সে সব নিয়ে চিন্তা করে। নতুন প্রজন্ম যারা এদেশে বড় হচ্ছে তাদের মাঝে বাংলা ভাষা, নিজস্ব সাংস্কৃতি, দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য ইত্যাদি শিখানোর ব্যাপারে সবার মাঝে
একটা তাড়না লক্ষ করা যায়। এরকম অসংখ্যা ইতিবাচক দিক আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে আমার ভাল লেগেছে। 

বাবলুঃ প্রবাসীরা দেশের জন্য অভিশাপ না আর্শিবাদ?

মোর্তোজাঃ অভিশাপ শব্দটা প্রবাসীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা একেবারেই বেমানান। প্রবাসীরা দেশের জন্য শুধু আর্শিবাদ নয়,  অন্যতম নেয়ামকও বটে। কাগজ কলমে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় খাত পোষাক শিল্প। কিন্তু পোষাক শিল্পের পিছনে সরকারের সহযোগিতা ও বিনিয়োগের কথা বিবেচনা করলে প্রবাসীরাই দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য সবচাইতে বড় হাতিয়ার। এটা কথার কথা নয় প্রমানযোগ্য সত্য। প্রবাসীরা নিজের গরজে এবং নিজের খরচে সরকারের নুন্যতম সহযোগীতা ছাড়া কন্টকাকির্ন পথ পাড়ি দিয়ে প্রবাসে আসে। একেবারেই নিঃশার্থ ভাবে বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে দেশের পোষাক খাদ্য খাবার সহ প্রয়োজনীয় অনেক কিছু ক্রয় করে। জীবনের আরামকে হারাম করে সঞ্চয় করে অর্থ । সেই অর্থ বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবে দেশে পাঠায়। যা দেশের অর্থনীতির জন্য অন্যতম বড় চালিকা শক্তি। বাংলাদেশ মূলত প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার উপর টিকে আছে। বিশ্বব্যাংক এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইসলামি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং আই এম.এফ থেকে নেয়া ঋণের অর্থ দুর্নিতিগ্রস্থ সরকার খুব একটা সঠিক খাতে ব্যবহার করে না। ফলে দেশের তেমন কোন উন্নতি চোখেও পড়েনা। তবে মজার ব্যাপার হলো ঐ সব  ঋনের টাকা সরকার পরিশোধ করে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে। প্রবাসীরা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠায় অথচ সরকার এই মূল্যবান অর্থ তাদের পাপের প্রাশ্চিত্য করার কাজে ব্যয় করে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।

বাবুল ঃ আপনি বলছেন প্রবাসীরা দেশের নিয়ামক্ কথাটা সত্য হলে দেশে প্রবাসীরা সবচাইতে বেশী অবহেলিত ও প্রতারিত হয় কেন?

মোর্তোজা ঃ কারন দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় যে যখন থাকে তারা প্রবাসীদের ব্যপারে সমবেদনশীল নয়। সরকার মনে করে প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠাতে বাধ্য। মঞ্চে দাঁড়িয়ে সরকারের মন্ত্রিরা প্রবাসীদের জন্য পজেটিভ কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবে সেগুলো প্রপাগানণ্ডা ছাড়া আর কিছু নয়। 
যাদের ক্ষমতা আছে, পেশি শক্তি আছে, জ্বালাও পোড়াও ভাংচুর করতে পারে, সরকারকে বিপদে ফেলার হুমকি দিতে পারে, সরকারকে ব্লাকমেইল করতে পারে তাদের প্রতি আমাদের সরকার গুলো অনেক সচেতন। প্রবাসীরা এগুলোর কিছুই করতে চায় না। তারা দেশের মঙ্গল চায়। প্রবাসীরা সংগঠিত নয়। সুতরাং তাদের দাবী যতই ন্যায্য হোক যুক্তিসংগত হোক তা আমলে আনে না সরকার । এসব কারনেই আমাদের প্রবাসী সোনার ছেলেরা এত বেশী অবহেলিত। 

বাবলু ঃ আমি মনে করি শুধু প্রবাসীদের অর্থ এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। আপনি কি মনে করেন?

মোর্তোজাঃ আমিও আপনার সাথে একমত। সক্ষম ও যোগ্য প্রবাসী অনেক আছে যারা দেশে বিপুল অর্থ ও অভিজ্ঞতা বিনিয়োগ করে দেশের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। কিন্তু এইসব প্রবাসীদের আস্থা অর্জনে আমাদের সরকারগুলো সবসময় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কারন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ এখনো অতটা সক্ষমতা অর্জন করতে পারে নি। রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করেন তারাও হতে পারেননি যোগ্য এবং সৎ।

বাবলুঃ কাছ থেকে দেখা বর্তমান মহাজোট সরকার সম্পর্কে কিছু বলুন।

মোর্তোজা ঃ নিরুস্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী বর্তমান মহাজোট সরকারের নানা ব্যর্থতায় দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। আওয়ামী লীগের কিছু কিছু নেতার কথাবার্তা শুনলে মনে হয় তারা দৈব শক্তি পেয়ে গেছে, যে শক্তি ব্যবহার করে তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবে। ভোটের জন্য জনগনের কাছে আর কোনদিন যেতে হবে না। 
নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোট যে পরিমান উদার ছিল। নৈতিকতা ও আদর্শের কথা বলেছিল। সততার কথা বলেছিল। নির্বাচন শেষে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ পুরাপুরি তাদের নির্বাচন পূর্ব অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গেছে। তারা নীতি, নৈতিকতা, আদর্শ সর্ব জায়গা থেকে সরে গছে। মন্ত্রিসভায় অবিশ্বাস্যভাবে আযোগ্য এবং অদক্ষ লোকদের স্থানকরে দেয়া হয়েছ্, যারা মন্ত্রনালয় পরিচালনা করার অযোগ্য। মন্ত্রিরা অযোগ্য হওয়ায় এ সরকার পদে পদে হোঁচট খাচ্ছে। নির্বাচনের সময় দেয়া প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার জনগনকে দেয়া প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন করতে আন্তরিক  বলেও দেশের মানুষ আর বিশ্বাস করতে পারছে না।

বাবলু ঃ এ ভাবে চলতে থাকলে দেশের ভবিষ্যৎ কি?

মোর্তোজাঃ এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। বর্তমান পরিস্থিতি দেখলে মনে হয় এক অনিশ্চিৎ কালো গহবরের দিকে ধাবিত হচ্ছে বাংলাদেশ। আমি মনে করি এ দিন চির দিন স্থায়ী হবে না। পরিবর্তন আসবেই। কিন্তু তার জন্য ১০/২০ না ৫০ বছর লাগবে বলা কঠিন। সত্য যে দেশের সাধারণ মানুষ খুব কর্মঠ। দেশের কৃষক ভিষন সৎ ও পরিশ্রমি। কৃষকের জীবনে হরতাল নেই। ধর্মঘট নেই। কর্মবিরতি নেই। অসততা, অনৈতিকতা নেই। তারা বৃষ্টিতে ভিজে রোদে পুরে ফসল উৎপাদন করে। আপনারা প্রবাসীরা কৃষকের মতো প্রায় একই কায়দায় বৈদেশিক মুদ্রা দেশকে দেন। বর্তমান বাংলাদেশ কৃষকের ঘাম ও প্রবাসীদের মেহনত এই দুটি পিলারের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। সুতরাং দেশর ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদি না হওয়ার কোন কারন নেই।

বাবলু ঃ আপনি কি মনে করেন পিলখানা ট্রাজেডির সাথে জড়িত সকলকে সনাক্ত এবং বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।

 মোর্তোজাঃ এক কথায় পিলখানার হত্যাযজ্ঞ ইতিহাসের জঘন্নতম বর্বরচিত কাজ। সুতরাং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষিদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সরকারের এই বিচার প্রত্রিয়াটা ভিষন প্রশ্নবিদ্ধ এবং আগোছালো ভাবে এগিয়ে চলেছে। লংঘন করা হচ্ছে মানবাধিকার। যারা প্রকৃত দোষি তারা হয়তো দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে। বিচার করা হচ্ছে নির্দোষ বা সামান্য অপরাধিদেরকে। যারা ছিল পরিস্থিতির স্বীকার। সত্য যে সামরিক বাহিনীর এত গুলো অফিসার এক সাথে হত্যা দেশের জন্য এক অপূরনীয় ক্ষতি।

বাবলু ঃ সাগর রুনি হত্যা, সৌদি কুটনৈতিক হত্যা, ইলিয়াছ আলী, চৌধুরী আলমসহ শতাধিক গুমের কোনটাই সরকার বা গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করে কুল কিনারা পাচ্ছে না। আসলে ব্যাপারটা কি? সরকারের কোন এজেন্সি কি এসব করছে? 

মোর্তোজা ঃ সরকার বা গোয়েন্দা সংস্থা কিছুই জানে না এ কথা সঠিক নয়। তাদের কাছে নিশ্চয়ই তথ্য আছে। ইলিয়াস আলী যেভাবেই নিখোঁজ হোক না কেন- পরবর্তিতে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যে কথা বলেছেন সেই কথার পরিপেক্ষিতে ইলিয়াস আলীর ঘটনার পুর দায় দায়িত্ব সরকারের  উপর এসে বর্তেছে। সরকার এর দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। সরকারের কোন এজেন্সি এই গুম  খুন করছে কিনা আমার জানা নেই। 
সাগর রুনি হত্যার কয়েকদিন পর পর্যন্ত আমরা জানতাম তদন্ত সঠিক পথে এগুচ্ছে। হঠাৎ একদিন প্রধানমন্ত্রি বললেন “সব আলামত নষ্ঠ হয়ে গেছে ” এই হত্যাকান্ডকে একটি ডাকাতির ঘটনা হিসাবে সাজানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করল ডিবি পুলিশ। সময়ক্ষেপন করার জন্য এখন র‌্যাবের হাতে তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সাগর রুমি হত্যার বিচার নিয়ে অযথা অপেক্ষা করে লাভ নেই। যা হবার হয়ে গেছে। 
সৌদি কুটনিতীক হত্যার ঘটনাটি খুব বাজে দৃষ্টান্ত তৈরী হয়েছে বাংলাদেশে। এটা হয়ত বাংলাদেশের জনমানুষের কাছে এত গুরুত্বপূর্ন নয়। কিন্তু কূটনিতীকরাও বাংলাদেশে নিরাপদ নয় এমন একটা প্রচারনা আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ও বহিরবিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজের সংকট সৃষ্টি করেছে। এটা ।বর্তমানমহাজোট সরকারের চরম ব্যর্থতা। এ ব্যর্থতা থেকে এই মুহুর্তে বের হতে হবে বাংলাদেশকে

 

বাবুলঃ বিরোধীদল বলে দেশ চলছে অদৃশ্য কোন শক্তির সুতোরটানে। এ কথার সাথে আপনি কতটুকু একমত।

মোর্তোজাঃ বিরোধী দল কি বলে তার ব্যখ্যা তারা ভাল দিতে পারবে। তবে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে এ সরকার পদে পদে ব্যর্থ হয়েছে তাদের অযোগ্যতা ও অদক্ষতার কারনে। এই সব কারনে অনেক সিদ্ধান্ত দেশের জন্য ইতিবাচক না হয়ে নেতিবাচক মনে হয়। ভারত কে ট্রানজিট দেয়া নিয়ে বিতর্ক নেই। ট্রানজিট হয়ত দেয়া উচিত। কিন্তু বিনিময়ে দেশ কিভাবে উপকৃত হবে সেব্যাপারে সরকার একেবারেই উদাসিন। অনেক সময় সরকারের কথা এবং কাজে মিল খুঁজে পাওয় যায় না। আমাদের ২/১ জন উপদেষ্টার কথা শুনলে মনে হয় তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রির উপদেষ্টা। ভারতীয় পন্য পরিবহনের জন্য তিতাসের ওপর বাধ দিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল নজির স্থাপন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। নিজ দেশের বিশাল জনগোষ্ঠির ক্ষতি করে বিনা শুল্কে অন্যদেশকে এভাবে সুযোগ করে দেয়ার ইতিহাস আমার অন্তত জানা নেই। এ ধরনের ভুরি ভুরি ঘটনা আছে যা  বিশ্লেষন করলে মনে হবে দেশ পরিচালিত হচ্ছে অদৃশ্য কোন সুতোর টানে। তবে জনগন এখন অনেক সচেতন।  অদৃশ্য শক্তি নয় কারা এগুলো করছে সেটা জনগন   বোঝে।

বাবলুঃ যুদ্ধাপরাধী বা মানবতা বিরোধীদের বিচার সম্পর্কে কি বলবেন। 


মোর্তোজাঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল যেটা তৈরী হয়েছে সেটা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বলে আমি মনে করি। যে প্রক্রিয়ার বিচার শুরু হয়েছে সেটাও আর্ন্তজাতিক মানসম্পন্ন। তদন্ত কর্মকর্তা এবং প্রসিকিউস নিয়োগও একই মানদন্ডে করা হয়েছে। তবে তদন্ত কর্মকর্তা এবং প্রসিকিউষ্টারদের যোগ্যতা একেবারেই নিুমানের। তদন্তের ক্ষেত্রে এরা ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। প্রসিকিউটররা সাক্ষি এবং তথ্য প্রমাণ হাজির করার ক্ষেত্রে লেজে গোবরে মাখিয়ে ফেলছে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় থাকছে কিনা সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
যুদ্ধপরাধীদের অর্থের যোগান দাতা কাশেম আলীর সংগে সরকারী এমপি-মন্ত্রির বৈঠকের খবর গনমাধ্যম ফাঁস করেছে। কিন্তু ঐ মন্ত্রিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা  নেয়া হয়নি। গ্রেপ্তার করা হয়নি মির কাশেম আলীকে। এদিকে কিছু হলেই সরকার যুদ্ধপরাধের ইসু সামনে এনে বিরোধী দলকে বিচার বানচালের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। সুতরাং সব মিলিয়ে যুদ্ধপরাধের বিচার শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহনযোগ্য হবে কি হবে না এ সন্দেহ একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাবে না। 

বাবলু ঃ “বাংলাদেশের আন্ডার ওয়াল্ড এবং রাজনীতি” ও খনিজ সমুদ্র সংক্রান্ত আপনার লেখা বিরল তথ্যভিত্তিক দুটি বই আছে। এ সম্পর্কে  পাঠকদের কিছু বলুন।


মোর্তোজা ঃ বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের সব চাইতে বড় হাতিয়ার আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর নেতৃবৃন্দ।  বরেণ্য অনেক বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আন্ডার ওয়াল্ড এর গডফাদার। দেশে রাজনৈতিক অযোগ্যতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবার এটা বড় একটা কারন। আন্ডার ওয়াল্ড কে ব্যবহার করে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, মারামারি, সন্ত্রাস, চান্দাবাজি, ছিনতাই, রাহাজানিসহ সর্ব ধরনের অপকর্ম সংগঠিত হয়। এ কাজগুলো আমাদের রাজনীতিবিদরা দীর্ঘ বছর ধরে করে আসছে ,তারা এক ধরনের প্রাকটিসের মধ্যে আছে।
 বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ হচ্ছে গরিবের সুন্দরী বধুর মতো ,সবার অধিকার আছে। দেশের খনিজ সম্পদের দিকে বিদেশী শক্তির এক ধরনের নজর বা লোভ কাজ করে। বর্তমান সরকারের আমলেই বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পরেছে। এই সেক্টরের যে সব কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে এদের কারো সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা নেই। সমাজের মানুষ এদেরকে অনৈতিক অসৎ, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ এবং চোর হিসাবে চিনে। এরা বাংলাদেশের জন্য কাজ করার দ্বায়িত্ব নিলেও প্রকৃত পক্ষে কাজ করে বিদেশী কোম্পানী গুলোর অনুকুলে। বাংলাদেশের সব সরকারই ক্ষমতায় এসে দেশের খনিজ সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দিবার অনুকুলে আইন তৈরী করে। মজার বেপার হলো এইসব দেশী বিদেশী লুটেরাদের সাথে ক্ষমতায় বসা  সর্বোচ্চ মহল প্রত্যক বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত থাকেন। 

বাবলু ঃ কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ ব্যাবস্থা দেশের অর্থনীতির জন্য কতটুকু সহায়ক বলে আপনি মনে করেন। 


মর্তোজাঃ উদ্ভট যুক্তি দিয়ে সরকার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করেছিল। কিছু ব্যবসায়ীরা ছাড়া প্রায় সবাই এর বিরোধীতা করেছিল। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু কাজ  একেবারেই অগ্রগতি হয় নাই। গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা বললেও গ্যাসের স্বল্পতার কারনে সরকার তাও করতে পারেনী। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানী খাতের ভবিষ্যৎ ভিষনভাবে ভয়াবহ। এ কারনে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কি পরিমান বিপদ ও বির্পজ্জয়ের মখোমুখি হবে তা এই মূহুর্তে অনুধাবন করা যাচ্ছে না। পৃথিবীর কোথাও কুইক রেন্টাল স্থায়ী ভাবে হয় না। এটা করা হয় সল্প সময়ের জন্য। এই সময়ের মধ্যে বড় বড় পাওয়ার প্লান্ট এসে কুইক রেন্টালের স্থান দখল করে। বাংলাদেশের চিত্র এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো। স্থায়ী পাওয়ার প্লান্ট তৈরীর ক্ষেত্রে কাগজ কলমে অনেক কল্প কাহিনী আছে। বাস্তবে কোন প্রমান নেই। বছরে ৩০/৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। ঋণের  বোঝায় জর্জরিত  হয়ে পড়ছে  সরকার । আগামী ৫/৭ বছরে দেশে বড় কোন পাওয়ার প্লান্ট আসার কোন সম্ভাবনা নেই। সুতরাং দেশকে নির্ভর করতে হবে কুইক রেন্টালের ওপর। ভর্তুকি দিতে হবে হাজার হাজার কোটি টাকা। রাষ্ট্র হিসাবে যে ক্ষমতা বাংলাদেশের নেই। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে সরকার দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। দেশবরেন্য অর্থনীতি বিদদের মতে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে দেশের ভেঙ্গে যাওয়া অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড আর সহজে মজবুত করা আদৌ সম্ভব নয়। আগামীতে যদি সরকার পরির্বতন হয় তারাও অর্থনীতির এই ধ্বংস ঠেকাতে পারবে কিনা সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ থেকেই গেল। 

বাবলু ঃ ভারতের কারনে বাংলাদেশ যে ভাবে একের পর এক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে এর ভবিষ্যৎ কি?


মর্তোজাঃ সত্য কথা বলতে কি ভারতের সামনে রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ কোন দিনও যোগ্য হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। নিজের স্বার্থ নিয়ে অধিকার বা প্রাপ্তি যাই বলুন নিজেকেই বলতে হয়। অধিকার এমনিতেই প্রতিষ্ঠিত হয় না। যোগ্যতা দিয়ে আদায় করে নিতে হয়। বাংলাদেশের যা বলা উচিত দেশ  তা বলতে পারে না । প্রধান মন্ত্রির উপদেষ্টা যদি প্রকাশ্যে ভারতের সাফাই গায় তবে দোষ ভারতের না বাংলাদেশের? টিপাই মুখে বাঁধ হচ্ছে। দেশের পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন এতে ভয়াবহ ক্ষতি হবে বাংলাদেশের। এদিকে প্রধান মন্ত্রির ভারত পন্থি উপদেষ্টা বলছেন এই বাধ বাংলাদেশের জন্য ভিষন উপকারী। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ভারতের কাছে একটা চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠিতে তারা লিখেছে টিপাই মুখ বাঁধ দিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে সেখান থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ পেতে আগ্রহী। এখন আর একবার চিন্তা করুন দোষ কার ?  ভারত বড় দেশ। সুতরাং তারা চাইতেই পারে যে বাংলাদেশ তার প্রভাবলয়ের থাকবে।  এই বলয় থেকে বেরিয়ে আসার দায়িত্ব সরকারের। দেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতি পরাষ্ট্রনীতি এবং প্রশাসন যদি চলে ভারতের ইচ্ছামত সে ব্যার্থতা কার? 
ভারতকে ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশ যদি সিংগাপুর হয় সেক্ষেত্রে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। সরকারী ভাবে জানা গেল ভারত এক বিলিয়ন ডলার ঋন দিবে সেই অর্থ দিয়ে বাস ও ট্রেন ক্রয় করা হবে। বন্দর, রাস্তাঘাট ও ব্রীজের উন্নয়ন হবে। ভারতের উপর দিয়ে নেপাল, ভুটান, মায়ানমার এবং চীন যাবে বাংলাদেশের গাড়ী ঘোড়া। ট্রানজিটের শুল্ক দিয়ে বিপুল লাভবান হবে বাংলাদেশ। ধনি দেশে পরিণত হবো আমরা। এগুলো সব মন্ত্রি ও উপদেষ্ট্রার কথা।  বাস্তবতা হলো- রাস্তা, ব্রীজ নতুন তো দূরের কথা পুরনো গুলো সংস্কার হয় নি। বন্দর আছে আগের জায়গায়। তবে ট্রেন এবং বাস ক্রয় করার জন্য ওর্ডার দেওয়া হয়েছে ভারতে। উচ্চ সুদে ভারতের দেওয়া ঋণের টাকা দিয়ে বাস ট্রেন ক্রয় করা হচ্ছে ভারত থেকে। আর সরকার দেশের বিশাল ক্ষতি করে আশুগঞ্জে বালুর বস্তা ফেলে ভারতীয় পন্য নামানোর ব্যবস্থা করেছে। দেশের বুকের উপর দিয়ে পরীক্ষার নামে বিনা শুল্কে ঘুরছে ভারতের চাকা। 
ভারতের ত্রিপুরায় যেতে আমরা ট্রানজিট দেবো। বিনিময়ে আমাদের ন্যায অধিকার তিস্তার পানি দিতে হবে। দেশের অবকাঠামো সুবিধা ভারতও ভোগ করবে সুতরাং নিঃশর্ত  ও সুদ মুক্ত ঋণ দিতে হবে বাংলাদেশকে। এশিয়ান মানদন্ড রক্ষা করে ট্রানজিটের উপযুক্ত শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। বিনা কারনে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। নেপালকে ট্রানজিট দিতে হবে বাংলাদেশে প্রবেশের, দখল করে রাখা বাংলাদেশের ভুখন্ড ভারতকে ফেরত দিতে হবে ইত্যাদি। দেশের স্বার্থের অনুকুলে এ ধরনের দর কষাকষি করতে যদি ব্যর্থতার পরিচয় দেয় সরকার। সেক্ষেত্রে ভারত একতরফা সুবিধা ভোগ করবে বাংলাদেশের কাছ থেকে এটাকি স্বাভাবিক নয়? 
নিজ অবস্থান শক্ত রাখার জন্য সরকারকে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে দেশ হিসাবে ভারত যতই বড় হোক না কেন, অনেক বিষয়ে বাংলাদেশের উপর ভারতকে নির্ভর করতে হয়। সুতরাং নতজানো পরাষ্ট্রনীতি পরিহার করে দেশের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট ব্যপারে বলিষ্ট কুটনৈতিক তৎপরতার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের ন্যাষ অধিকার ছিনিয়ে আনতে না পারলে ভারত একতরফা সুবিধা সবসময় ভোগ করতে থাকবে।

বাবলু ঃ মাননীয় অর্থ মন্ত্রী বলেছেন পদ্মা সেতুর কাজ শুরুই হয়নি সুতরাং দুর্নিতি হবার সুযোগ কোথায়। এ দিকে বিশ্ব ব্যাংক বলেছে ভিন্ন কিছু। প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলুন তাছাড়া এসরকার কি পদ্মা সেতু করতে পারবে?

 
মোর্তোজাঃ বর্তমান সরকারের মন্ত্রিপরিষদের অনেকেই অসত্য, বিভ্রান্তিকর এবং দায়িত্ব জ্ঞানহিনের মত কথা বলে। পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নিতি অবশ্যই হয়েছে। এক্স যোগাযোগ মন্ত্রি সৈয়দ আবুল হোসেনের “সাকো” নামে একটি এজেন্সি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। পদ্মা সেতুর কাজ পেতে আগ্রহী কোম্পানীগুলোকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাকো এর মাধ্যমে আসতে বলা হয়। জানা গেছে কেনাডিয়ান একটি কোম্পানী সাকো-এর মাধ্যমে কাজ পেতে কমিশনের অর্থের লেনদেন ও করেছে। সরকারী কাজ ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আসতে বাধ্য করা এবং কমিশনের অর্থ অগ্রিম গ্রহন করা কি দুর্নিতি নয়। বিশ্বব্যাংকে বাইপাস করে সরকার একবার মালয়েশিয়া আবার জাপান এর পিছু ছুটেছে। কিন্তু বিশ্ব ব্যাংক ব্যাতিত এরা যে কোন সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবে না একথা সরকারও জানে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যা বলছে সেটা শুধু বলার জন্যই বলা। এতসহজ অংশ মন্ত্রিরা বোঝেনা তা নয়। 

বাবলু ঃ আপনি টিভি এবং প্রিন্ট মিডিয়া সাথে উচ্চ পদস্থ্য হয়ে দীর্ঘদিন জড়িত। আপনার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের গনমাধ্যম কি সম্পূর্ন স্বাধীন? 


মোর্তোজাঃ সম্পূর্ন স্বাধীন কোন দিনও ছিলনা। তবে তুলনা মুলক বিচারে এখন অনেকটা স্বাধীন। মিডিয়া মালিকদের প্রায় সকলের অন্যান্য ব্যবসা আছে। তারা তাদের ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করে সরকারকে বিপদে ফেলতে চায় না। তাই অনেক কিছু কৌশলে এড়িয়ে যায়। তবে সরকার নিজেরাই মাঝে মাঝে আনাড়ির মত কাজ করে। যেমন কোন কোন টিভির টকশো বন্ধ করে দেয়া, টকশোতে অনেককে যেতে বাঁধার সৃষ্টি করা,  কিছু মিডিয়ার প্রচার কোন যুক্তি ছাড়াই বন্ধ করে দেয়া।  ১২ মার্চ বিএনপি মহাসমাবেশ সরাসরি সম্প্রচার করতে না দেওয়া। এমনকিছু অপরিপক্ষ সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে একথা সত্য। কিন্তু সরকার লাভবান হতে পারেনী। যেমন ধরুন সরকার বাংলাভিশনের টকশো বন্ধ করে দিল। কিন্তু এখবরটি সরকার গোপন রাখতে পারলো না। কোন না কোন মিডিয়া প্রচার করলো সরকার বাংলাভিশনের টকশো বন্ধ করে দিয়েছে। এতে একটা অনুষ্ঠান বা সংবাদ বন্ধ করে যে পরিমান লাভবান হবার কথা ছিল সে পরিমান লাভ না হয়ে সকরকারের ক্ষতি হল অনেক বেশী।
 

বাবলু ঃ লিবিয়া ফেরত বহু বাংলাদেশী ইটালী সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এদের ব্যাপারে বাংলাদেশী মিশনগুলি খুবই উদাসিন। একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে ব্যাপারটি আপনি কিভাবে দেখছেন। 


মোর্তোজাঃ আমি দূতাবাস সম্পর্কে বেশী কিছু বলতে চাই না। কারন আমাদের রাষ্ট্রদূতরা মানুষিকভাবে সব কাজের জন্য তৈরী নয়। তাদেরকে ঐ ভাবে প্রশিক্ষন বা টার্গেট দিয়েও পাঠানো হয় না। রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্র ও স্থানীয় বাংলাদেশীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজ কারার কথা। কিন্তু তারা তা করে না। সরাসরি দলীয় নিয়োগ নিয়ে তারা রাজার বেশে আসে। বসবাসও করে রাজা বাদশার মতো। জড়িয়ে পড়ে নানান অনৈতিককাজের মধ্যে। ইতালীতে এখন যে রাষ্টদূত আছেন তিনিও এ সব অভিযোগের উর্ধে নয়। 
লিবিয়া ফেরৎ কিছু বাংলাদেশীর সাথে আজ আমার কথা হয়েছে। কি মর্মান্তিক কাহিনি। ৩/৪ দিন ধরে সমুদ্র পথে মাছধরা টলারে চড়ে  নিশ্চিৎ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে এরা ইতালীতে আসার পর স্থানীয় সরকার যে মানবতার পরিচয় দিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। আমাদের দূতাবাসের সাধারন দায়িত্ব ছিল ইতালীয়ান সরকারের সাথে কথা বলে এদের পূন:বাসনের ব্যবস্থা করা। যা অন্যান্য বিভিন্ন দেশের দূতাবাস তাদের সরনার্থিদের জন্য করেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু আমাদের রাজা  মহারাজারা এদের খোঁজ খবর পর্যন্ত নেয়নি।
    আমাদের রাজনীতি বিদরা তাদের আত্মীয় স্বজন কে রাষ্টদূত হিসাবে বিভিন্ন  দেশে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। আমার মনে হয় ইতালীও তেমন ঘটনার একটি। সুতরাং তারা যে লিবিয়া ফেরৎ অসহায় ছেলেদের খোঁজ খবর নেবে না এটাই স্বাভাবিক। কারণ তারা জানে এই সরকার যতদিন আছে ততোদিন তাদের কিছুই হবে না। সুতারং আমার মনে হয় প্রবাসীদের উচিত এই রাজা মহারাজা মার্কা রাষ্ট্রদূতদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা। 

 

Published...Bangla post, Natun Din ..2012